FISHERIES SUBJECT REVIEW
Subject Review : Fisheries
ফিশারিজ সাবজেক্টের নাম শুনলে হয়তো সবার মাথায় যে জিনিস প্রথম ঢুকে সেটা হল মাছ নিয়ে পড়ে আর কি হবে...... বড়জোর ফিশারি করব......কিন্তু এই ধারণা সম্পূর্ণ ভুল।
নদীমাতৃক এই দেশে ফিশারিজ পড়ার সুবিধা প্রচুর। বাংলাদেশ হল ৪র্থ বৃহত্তম মাছ উৎপাদনকারী দেশ। আর ৫ বছর পরেই হয়তো দেশে আর নদী ও বিলের মাছ পাওয়া যাবে না। তখন দেশের ৬৫ ভাগ প্রোটিনের চাহিদা যারা মেটাবে তারা হল ফিশারিজ গ্র্যাজুয়েট। এই সাবজেক্টের অন্যতম আরেকটি সুবিধা হল এই সাবজেক্ট থেকে ডাইভারস করে অন্য সেক্টরেও ঢোকা যায়। আর ফিশারিজে শুধু মাছই নয় বরং অন্যান্য জলজ প্রাণীর চাষ করে অনেক লাভবান হওয়া যায়। যেমন ভালুকার কুমির খামার। সেখানে একজন কুমির বিশেশজ্ঞ মাসে লাখ টাকার উপরে আয় করতে পারেন।বাগদা চিংড়ির উন্নত খামারে একজন টেকনিশিয়ান যে কি সুযোগ সুবিধা ভোগ করেন তা বলার অপেক্ষা থাকে না। দেশে শিক্ষিত ভাল টেকনিশিয়ান না থাকায় বাইরে থেকে কয়েক লাখ টাকা বেতনে মানুষ আনা হয় যা আমাদের কাছে দুঃখজনক।
সর্বোপরি অর্জিত জ্ঞান কাজে লাগিয়ে বিজনেসের মাধ্যমে নিজেকে সুপ্রতিষ্ঠিত করা।
আমাদের দেশের বিশাল সমুদ্র এলাকায় খুব শিগ্রই গবেষণা শুরু হবে। তখন সেখানে কাজ করতে পারবে শুধু মেরিন সায়েন্স ও ফিশারিজ গ্র্যাজুয়েটরা। আর স্কলারশিপ পেয়ে বাইরে যাওয়ার জন্য এছাড়া অন্য কোন সহজ মাধ্যম খুবই কম আছে। ইচ্ছা হলে নিজে থেকে কম খরচে বাইরে পড়া কোন ব্যাপারই না। এই সুবিধা অন্যান্য সাবজেক্টে খুবই কম।
এক হিসাবে নদীর দেশ হওয়ায় তুলনামুলকভাবে ফিশারিজ; ভেটেরিনারি ও এগ্রিকালচার থেকেও কার্যকর।
তাই যারা ভাবছ এই সাবজেক্টে পড়ে কি করবে, তারা এখনি তা মাথা থেকে ঝেড়ে ফেলো। কারণ এই সাবজেক্টে পড়ে যারা মোটামুটিও রেজাল্ট করে, তারা ভাল চাকরির পেছনে নয় বরং ভাল চাকরি তাদের পেছনে দৌড়ায়।
মোট কথা, ফিশারিজ এমন একটি সাবজেক্ট যার মাধ্যমে তুমি নিজেকে শুধু দেশেই নয় বরং বাইরেও সমানভাবে উন্নতির শিখরে পৌছাতে পারবে। তাই সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগো না।
বিসিএস ছাড়া বা সহ কোটা ভিত্তিকে সহজেই সরকারি চাকরি।
দেশের বিভিন্ন জায়গায় উন্নতমানের ফিশারিজ প্ল্যান্টে লোভনীয় বেতনে চাকরির সুযোগ। খুব সহজেই দেশে বা বিদেশে বিজ্ঞানী হওয়া।
মৎস্য ও প্রাণী সম্পদ মন্ত্রণালয়কে সহায়তাকারী বেশ কয়েকটি মন্ত্রণালয় ও এর অধীনস্থ বিভিন্ন সংস্থা/দপ্তর সমূহে ফিশারীজ গ্রাজুয়েটদের কাজ করার সুযোগ রয়েছে। যেমন-
পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়
যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়
ভূমি মন্ত্রণালয়
স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়
সেচ, পানি উন্নয়ন ও বন্যা মন্ত্রণালয়
শিক্ষা মন্ত্রণালয়
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়
শিল্প মন্ত্রণালয়
অর্থ মন্ত্রণালয়
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়
শিপিং মন্ত্রণালয়
বেসরকারি সংস্থাসমূহ:
দেশের বিভিন্ন এনজিও এর নানা ধরণের আত্মনির্ভরশীল উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডের অন্যতম একটি হচ্ছে ফিশারীজ খাত। যেমন- বিভিন্ন মাছের একক ও মিশ্র চাষ, নার্সারি ব্যবস্থাপনা, বাওরে মৎস্য ব্যবস্থাপনা ও উন্নয়ন ইত্যাদি। এই সকল খাতে ফিশারীজ গ্রাজুয়েটের কাজ করার সুযোগ রয়েছে। যেমন-
বাংলাদেশ রুরাল এ্যাডভান্সমেন্ট কমিটি (ব্রাক)
প্রশিকা মানবিক উন্নয়ন কেন্দ্র
গ্রামীণ ব্যাংক
আরডিআরএস
বাঁচতে শেখা
টিএমএসএস
এসোসিয়েশন ফর সোশ্যাল এডভান্সমেন্ট (আশা)
আন্তর্জাতিক সংস্থাসমূহ:
বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের মতো আমাদের দেশেও ফিশারীজ বিষয়ক কার্যক্রম পরিচালনা করে থাকে যেখানে ফিশারীজ গ্রাজুয়েটের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। যেমন-
ওয়ার্ল্ড ফিস সেন্টার
ডিপার্টমেন্ট ফর ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট (ডিএফআইডি)
ফাও (এফএও)
ইউএনডিপি
কেয়ার ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ
কারিতাস বাংলাদেশ
নেচার কনজারভেসন মুভমেন্ট
এশিয়ান ওয়েটল্যান্ড ব্যুরো
ডানিডা (ডিএএনআইডিএ)
সোসাইটি ফর কনসারভেসন অব নেচার এন্ড এনভায়রনমেন্ট (এসসিওএনই)
ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন ফর কনসারভেসন অব নেচার এন্ড ন্যাচারাল রিসোর্স (আইইউসিএন)
সাউথ এশিয়া পার্টনারশিপ বাংলাদেশ (এসএপি)
ব্যক্তিগত খাতসমূহ:
ব্যক্তি পর্যায়ে গড়ে ওঠা নিম্নে প্রদত্ত শিল্পসমূহে যোগদান করা যেতে পারে-
মৎস্য খামার
মৎস্য হ্যাচারি
মৎস্য খাদ্য প্রস্তুতকারী কোম্পানিসমূহ
মৎস্য প্রক্রিয়াজাতকরণ শিল্পসমূহ
প্রকল্প ও প্রোগ্রামসমূহ:
স্বল্প ও দীর্ঘ মেয়াদী বিভিন্ন প্রকল্প ও প্রোগ্রামে ফিশারীজ গ্রাজুয়েটের অংশ নেয়ার সুযোগ রয়েছে। যেমন-
সরকারী অর্থায়নে বাস্তবায়িত বিভিন্ন প্রকল্প ও প্রোগ্রামসমূহ
আন্তর্জাতিক সংস্থাসমূহের (ডিএফআইডি, ইউএস এইড, ডানিডা ইত্যাদি) উদ্যোগে বাস্তবায়িত প্রকল্প ও প্রোগ্রামসমূহ
ব্যাংকসমূহ:
বিভিন্ন ব্যাংকের ফিশারীজ বিষয়ক ঋণপ্রদানের সেকশনে কাজ করার সুযোগ রয়েছে। যেমন-
বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক
রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক
সোনালী ব্যাংক
অগ্রণী ব্যাংক
রূপালী ব্যাংক
জনতা ব্যাংক
সমবায় ব্যাংক
কর্মসংস্থান ব্যাংক
আত্মকর্মসংস্থান:
বি.এস-সি. ফিশারীজ (অনার্স) ডিগ্রী অর্জনের পর একজন ফিশারীজ গ্রাজুয়েট নিজেই তার কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে পারেন
No comments
Thanks for your Comment.