মোদিকে ‘বিশ্বের সবচেয়ে স্বীকৃত সন্ত্রাসী’ বললেন পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী

Khawaja Asif and Narenda Modi
Khawaja Asif and Narenda Modi


ইসলামাবাদ, ১৩ মে – ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বিরুদ্ধে তীব্র ভাষায় আক্রমণ করেছেন পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা মুহাম্মদ আসিফ। তিনি মোদিকে “বিশ্বের সবচেয়ে স্বীকৃত সন্ত্রাসী” বলে অভিহিত করেছেন এবং ভারতের বিরুদ্ধে একাধিক গুরুতর অভিযোগ তুলেছেন।

সোমবার জিও নিউজে সম্প্রচারিত এক সাক্ষাৎকারে খাজা আসিফ দাবি করেন, ভারত শুধু নিজ দেশে নয়, আন্তর্জাতিক পর্যায়েও সন্ত্রাসবাদ ছড়িয়ে দিচ্ছে। তিনি উদাহরণ হিসেবে কানাডায় শিখ নেতাদের লক্ষ্য করে হামলার অভিযোগের প্রসঙ্গ তুলে বলেন, “ভারত ঘরোয়া সন্ত্রাসবাদ তো চালাচ্ছেই, সেইসঙ্গে এটি আন্তর্জাতিক পর্যায়েও ছড়িয়ে দিচ্ছে। এমনকি কানাডার মতো দেশেও তারা শিখ সম্প্রদায়ের নেতাদের টার্গেট করছে।”

এই মন্তব্যগুলো এসেছে এমন এক সময়ে, যখন ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সামরিক ও কূটনৈতিক উত্তেজনা ক্রমেই বাড়ছে। আসিফ দাবি করেন, চলমান এই সংঘাতে পাকিস্তান কূটনৈতিক, সামরিক এবং মনস্তাত্ত্বিক—তিন দিকেই সফলতা অর্জন করেছে।

তিনি আরও বলেন, ভারত দীর্ঘদিন ধরে পাকিস্তানের পশ্চিম সীমান্তে তেহরিক-ই-তালিবান পাকিস্তান (টিটিপি) এবং বালুচিস্তান লিবারেশন আর্মি (বিএলএ)-এর মতো নিষিদ্ধ সংগঠনগুলোকে সহায়তা করে পাকিস্তানে অস্থিরতা সৃষ্টি করছে। “গত দুই দশকেরও বেশি সময় ধরে ভারত এসব জঙ্গি সংগঠনের পেছনে অর্থ ও সহায়তা দিয়ে পাকিস্তানকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছে,” বলেন আসিফ।

সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী মোদির দেওয়া এক ভাষণের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, “তার কথায় পরাজয়ের ছাপ ছিল স্পষ্ট।” মোদির মুখেই কাশ্মির ও সন্ত্রাসবাদের মতো ইস্যু এখনো আলোচনার খোলা রয়েছে—এই স্বীকারোক্তিকে পাকিস্তানের জন্য একটি “ইতিবাচক ইঙ্গিত” হিসেবেও দেখছেন আসিফ।

তিনি আরও দাবি করেন, ভারতের অভ্যন্তরে মোদির জনপ্রিয়তা ক্রমেই কমছে। “ভারতের জনগণ এখন তার বিরুদ্ধে সোচ্চার হচ্ছে,” বলেন আসিফ। তিনি নিশ্চিত করেন, ভবিষ্যতের যেকোনো আলোচনায় কাশ্মিরসহ সব মূল ইস্যু পাকিস্তান তুলবে।

একটি উল্লেখযোগ্য দাবিতে আসিফ বলেন, ১০ মে পাকিস্তান পাল্টা সামরিক অভিযান শুরু করলে ভারতীয় সামরিক স্থাপনাগুলোকে সরাসরি লক্ষ্যবস্তু করা হয়। তার ভাষ্য অনুযায়ী, উত্তেজনা এমন পর্যায়ে পৌঁছায় যে ভারত যুদ্ধবিরতির জন্য দ্রুত পাঁচটি দেশের কাছে মধ্যস্থতার অনুরোধ জানায়।

“যেভাবে ভারত দ্রুত সহায়তা চেয়েছে, তা প্রমাণ করে তারা পরিস্থিতির গুরুত্ব বুঝতে পেরেছিল,” বলেন তিনি।

ভারত সরকার এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে এসব মন্তব্যের জবাব দেয়নি। তবে এ ধরনের পাল্টাপাল্টি বক্তব্য দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান বৈরিতা এবং কাশ্মির ও আঞ্চলিক নিরাপত্তা ইস্যুতে দীর্ঘদিনের বিরোধকে আরও গভীর করছে।

Post a Comment

Thanks for your Comment.

Previous Post Next Post