শফিউর রহমান ফারাবী
২০১৫ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি অমর একুশে গ্রন্থমেলা থেকে ফেরার পথে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) টিএসসি এলাকায় নৃশংসভাবে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছিল লেখক ও ব্লগার অভিজিৎ রায়কে। এই চাঞ্চল্যকর হত্যা মামলায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে দণ্ডিত শফিউর রহমান ফারাবীকে বুধবার (৩০ জুলাই) অন্তর্বর্তীকালীন জামিন দিয়েছেন হাইকোর্ট। বিচারপতি মো. জাকির হোসেন ও বিচারপতি কে এম রাশেদুজ্জামান রাজার সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এই গুরুত্বপূর্ণ আদেশ দেন। এই জামিন আদেশ অভিজিৎ রায় হত্যা মামলার আইনি প্রক্রিয়া এবং জনমনে নতুন করে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
ফারাবীর পক্ষে আদালতে জামিন আবেদনের শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এস এম শাহজাহান এবং আইনজীবী মুহাম্মদ হুজ্জাতুল ইসলাম খান। আইনজীবী হুজ্জাতুল ইসলাম খান সাংবাদিকদের জানান, বিচারিক আদালতের দেওয়া দণ্ডাদেশের রায়ের বিরুদ্ধে ফারাবী ২০২১ সালে হাইকোর্টে আপিল করেছিলেন এবং ২০২২ সালের ৪ আগস্ট হাইকোর্ট সেই আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ করেন। বিচারাধীন আপিলে ফারাবি জামিন চেয়ে আবেদন করেন।
---আইনজীবী খান জামিনের পক্ষে একাধিক শক্তিশালী যুক্তি উপস্থাপন করেন। তিনি বলেন, "২০১৫ সালের ৩ মার্চ থেকে কারাগারে আছেন ফারাবী। ফারাবী ১৬৪ ধারায় (স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি) কোনো স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেননি। মামলায় চারজন আসামি স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন, তাঁদের কেউই ফারাবীর নাম উল্লেখ করেননি। এমনকি তদন্ত কর্মকর্তা ছাড়া অন্য কোনো সাক্ষীর বক্তব্যেও তাঁর নাম আসেনি।"
তিনি আরও উল্লেখ করেন যে, ফারাবীর বিরুদ্ধে সরাসরি হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগ প্রমাণিত হয়নি, বরং তাকে ফেসবুকে উস্কানিমূলক পোস্ট দিয়ে অভিজিৎ রায়কে 'হত্যার প্ররোচনা' দেওয়ার অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছিল। এসব যুক্তির ভিত্তিতে ফারাবীর জামিন চাওয়া হয় এবং হাইকোর্ট তাকে অন্তর্বর্তীকালীন জামিন মঞ্জুর করেন। এর ফলে ফারাবীর কারামুক্তিতে আপাতত আর কোনো আইনি বাধা নেই বলে তার আইনজীবী জানিয়েছেন।
রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. এমরান খান।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
Thanks for your Comment.